গাইবান্ধায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা
তানিন আফরিন,গাইবান্ধা থেকে :
যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় স্ত্রীকে ব্রেড দিয়ে হাত সহ নানা জায়গায় কেটে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী সহ বাড়ির স্বজনরা। এই ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধা শহরের পলাশপাড়ায়। বুধবার বিকেলে ময়না তদন্তের পর নিহতের মরদেহ সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের ফকির পাড়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা জানান কুপতলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর একই গ্রামের সাজু মিয়ার মেয়ে রংপুর বেসরকারি প্রাইম নার্স কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্রী শাহীনা আকতারকে গত বছর ভুলিয়ে ভালিয়ে তাকে বিয়ে করে।
প্রথম স্ত্রী থাকায় শাহীনাকে নিয়ে শহরের ভাড়া বাসায় থাকতো জাহাঙ্গীর মেবর। জাহাঙ্গীর মেম্বর মাদকাসক্ত হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। তাই প্রতিদিনেই মাদকের টাকা লাগতো। টাকা না থাকলেই স্ত্রী শাহীনাকে মারপিট করতো ।
বাধ্য হয়ে শাহীনা তার পিতার বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যেই টাকা এনে স্বামীকে সন্তষ্ট করতো। কিন্তু তাতেও সন্তষ্ট ছিলেন না জাহাঙ্গীর মেম্বর । গত কয়েক দিন ধরে সে মানুষের কাছে নেয়া দেনার টাকা শোধ করতে স্ত্রী শাহীনার কাছে যৌতুকের ৪ লক্ষ টাকা আনতে বলে । এতে সে রাজী না হওয়ায় সে স্ত্রীকে মারপিট করতেন । গত সোমবার সন্ধ্যায় সে টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেয় এবং মারপিট করে । গভীর রাত পর্যন্ত স্ত্রীকে নিযার্তন করে ।
নেশায় করে রাত ১১ টার দিকে বাড়ি এসে স্ত্রীকে ব্রেড দিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। তারপর তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্লেড দিয়ে কেটে দেয় ও হাত পেরেক লাগিয়ে ফুটো করে দেয়। মঙ্গলবার সকালে তার পিতা মাতা ও স্বজনা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান দরোজার চৌকাঠের সাথে তার মেয়ে শাহীনার রক্তাক্ত দেহের গলায় ওড়না পেচিয়ে মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামী জাহাঙ্গীর মেম্বর পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে লাশ নিয়ে আসে গাইবান্ধা সদর থানায়। এব্যাপারে নিহতের ভাই জাফর মিয়া বাদী হয়ে গাইবান্ধা থানায় মামলা দায়ের করেন ।